লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ৫ নম্বর পার্বতীনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. ওয়াহিদুর রহমানকে বহিষ্কার হরা হয়েছে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় গতকাল রোববার লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইমরান হোসেন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ইউপি চেয়ারম্যানের পদটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ইউএনও মো. ইমরান হোসেন।
ইউএনও বলেন, ‘চেয়ারম্যান মো. ওয়াহিদুর রহমানের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে সদস্যরা অনাস্থা দিয়েছেন। তদন্তে তা প্রমাণিত হওয়ায় অনাস্থা প্রস্তাব অনুমোদন হয়েছে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় চেয়ারম্যানকে অপসারণ করে ওই পদটি শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে। বহিষ্কৃত চেয়ারম্যান ওয়াহিদুর রহমান ২০২১ সালের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হয়েছিলেন।’
পার্বতীনগর ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. মাইন উদ্দিন ময়ূর জানান, ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে নানা দুর্নীতি, অনিয়ম ও পরিষদের সদস্যদের (মেম্বার) সঙ্গে অসদাচরণ করে আসছেন ওয়াহিদুর রহমান। এলজিএসপি-৩, পরিষদের উন্নয়ন সহায়তা, গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার, রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর, কাবিখা, কাবিটা) অতিদরিদ্র কর্মসংস্থান কর্মসূচি ও বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বরাদ্দসহ বিভিন্ন বরাদ্দে ইউপি সদস্যদের অন্তভুক্ত করা হয়নি। কিন্তু কোনো সভা না করে প্রকল্পে মেম্বারদের নাম ব্যবহার করে ভুয়া স্বাক্ষরের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন ওয়াহিদুর রহমান। ইউপি সদস্য মো. মাইন উদ্দিন ময়ূর আরও জানান, ২০২১-২২ অর্থবছরের অতিদরিদ্র কর্মসংস্থান কর্মসূচির আওতায় ৮২ জন শ্রমিকের অনুকূলে ২৬ লাখ ২৪ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়েছে। চেয়ারম্যান প্রকৃত শ্রমিকদের নামে বিকাশ অ্যাকাউন্ট না খুলে নামে-বেনামে অ্যাকাউন্ট খুলে সে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। টিআর, কবিখা, কাবিটা বরাদ্দের ২ কিস্তির ১০ লাখ টাকা নামমাত্র প্রকল্পে ব্যয় দেখিয়েছেন। তা ছাড়া কোনো ধরনের সভা ছাড়াই অবৈধ সুবিধা নিতে এডিপি খাতের ১০ লাখ টাকা বরাদ্দের প্রকল্প তালিকা দাখিল করেন।
এসব ঘটনায় ২০২২ সালের ৪ সেপ্টেম্বর ইউপি সদস্য মো. মাইন উদ্দিন ময়ূর একটি অনাস্থাপত্র জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কাছে জমা দেওয়া হয়। এতে ১২ জন সদস্যদের মধ্যে ১০ জন সদস্য চেয়ারম্যানের নামে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এনে স্বাক্ষর করেন। সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের চেয়ারম্যানের বরাবরও অনিয়মের অভিযোগপত্র জমা দেন তাঁরা।
পার্বতীনগর ইউনিয়ন পরিষদের বহিষ্কৃত চেয়ারম্যান মো. ওয়াহিদুর রহমান বলেন, ‘আমি কোনো দুর্নীতি করিনি। এ নিয়ে আদালতে শরণাপন্ন হব। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। আমি ষড়যন্ত্রের শিকার।’
