Noakhali mail

মসজিদের দানবাক্সে মিলল ৪ কোটি ১৮ লাখ টাকা

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ চার কোটি ১৮ লাখ ১৬ হাজার ৭৪৪ টাকা পাওয়া গেছে। শনিবার সকালে পাগলা মসজিদের আটটি দানসিন্দুক খুলে ২০ বস্তা টাকা সংগ্রহ করা হয়। সারাদিন ধরে এই টাকা গণনা করা হয় বলে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ টি এম ফরহাদ চৌধুরী জানান। তিনি আরও বলেন, দানসিন্দুকে টাকা ছাড়াও ডলার, পাউন্ড, রিয়াল, দিনার, রিঙ্গিত ও স্বর্ণালংকার পাওয়া গেছে।

গণনার কাজে মাদ্রাসার ১১২ ছাত্র, ব্যাংকের ৫০ কর্মকর্তা, মসজিদ কমিটির ৩৪ জন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ সদস্য অংশ নেন। কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে গণনার কাজ শেষ করা হয়। এর আগে সর্বশেষ ২০২২ সালের ১ অক্টোবর ৩ মাস ১ দিনের মাথায় দানবাক্সগুলো খোলা হয়েছিল। তখন রেকর্ড তিন কোটি ৮৯ লাখ ৭০ হাজার ৮৮২ টাকা এবং বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া গিয়েছিল। এবার ৩ মাস ৬ দিন পর দানসিন্দুক খোলা হয়। কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও পাগলা মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক পারভেজ মিয়া জানান, মসজিদে প্রাপ্ত দানের টাকা থেকে পাগলা মসজিদ এবং এই মসজিদ কমপ্লেক্সের অন্তর্ভুক্ত মাদ্রাসা, এতিমখানা ও গোরস্থানের ব্যয় নির্বাহ করা হয়। এ ছাড়া জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানায় সহায়তার পাশাপাশি গরিব ছাত্র ও দুঃস্থদের মাঝে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়। বিভিন্ন সামাজিক কাজেও টাকা দেওয়া হয়। মেয়র আরও জানান, সব টাকা ব্যাংকে জমা রাখা হবে। বর্তমানে পাগলা মসজিদ কমপ্লেক্সকে ঘিরে এখানে একটি বড় প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে। এটি বাস্তবায়ন হলে মসজিদ কমপ্লেক্স আরও দৃষ্টিনন্দন হবে।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, সুউচ্চ মিনার ও তিন গম্বুজ বিশিষ্ট তিনতলা পাগলা মসজিদ কিশোরগঞ্জে অন্যতম ঐতিহাসিক ধর্মীয় স্থাপনা। জেলা শহরের পশ্চিম প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে হারুয়া এলাকায় অবস্থিত পাগলা মসজিদটি প্রায় চার একর জায়গাজুড়ে অবস্থিত।

কথিত আছে, প্রায় পাঁচশত বছর আগে বাংলার বারো ভুঁইয়া বা প্রতাপশালী বারো জন জমিদারদের অন্যতম ঈশা খাঁর আমলে দেওয়ান জিলকদর খান ওরফে জিল কদর পাগলা নামক একজন ব্যক্তি নদীর তীরে নামাজ পড়তেন। পরবর্তী সময়ে ওই স্থানটিতে মসজিদটি নির্মিত হয়। জিল কদর পাগলার নামানুসারেই মসজিদটি ‘পাগলা মসজিদ’ হিসেবে পরিচিতি পায়।

Share now