ফেনীতে উভয় লিঙ্গের এক শিশুর জন্ম হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে সদর হাসপাতালে শিশুটির জন্ম হয়। মা ও সন্তান দুজনই সুস্থ আছে। ফেনী সদর জেনারেল হাসপাতালের লেবার ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স ফাতেমা বেগম বলেন, ‘প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে ছাগলনাইয়া উপজেলার এক প্রসূতি হাসপাতালে ভর্তি হলে নরমাল ডেলিভারির প্রস্তুতি নেওয়া হয়। সন্তান ভূমিষ্ঠ হলে ওই নবজাতকের মধ্যে পুরুষ-স্ত্রী উভয় লিঙ্গের অর্গান দেখা যায়। উভয় লিঙ্গের শিশুর জন্মের পর সবার মধ্যে কৌতূহল সৃষ্টি হয়। এটি প্রথম অভিজ্ঞতা।’
ফেনী সদর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আসিফ ইকবাল বলেন, ‘দুই লিঙ্গ নিয়ে জন্ম নেওয়া নবজাতক ও মা সুস্থ আছেন।’ তবে বিষয়টি নিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা অথবা চট্টগ্রামে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। শিশুর বাবা মহিউদ্দিন বলেন, ‘গতকাল প্রসব বেদনা উঠলে স্ত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করি। এখন এ অবস্থায় কী করব বুঝতে পারছি না। এই শিশুর চিকিৎসা করানো আমার পক্ষে অসম্ভব।’
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্টেট্রিকস অ্যান্ড গাইনোকলজি বিভাগের চিকিৎসক অধ্যাপক রেজাউল করিম বলেন, ‘এটি সাধারণ জিনগত ত্রুটিজনিত সমস্যা। আমাদের সমাজে এ ধরনের মানুষ রয়েছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এটাকে “ট্রু হারমাফ্রোডিটিজম” বলা হয়।’ ডা. রেজাউল করিম বলেন, ‘জন্মের পরই এ ধরনের শিশুর চিকিৎসা করা সম্ভব। শিশু হরমন বিভাগ এবং শিশু সার্জারি বিভাগ যৌথভাবে এসব শিশুর চিকিৎসা করে থাকে। এ ক্ষেত্রে নারী বা পুরুষ যে হরমনের প্রভাব বেশি থাকে, শিশুটিকে চিকিৎসার মাধ্যমে সেই দিকে পরিবর্তন করা যায়।’
রেজাউল করিম আরও বলেন, ‘এদের প্রজনন ক্ষমতা খুবই কম থাকে, বা ক্ষেত্রবিশেষ থাকে না। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানসিক বিকাশজিনত ত্রুটি দেখা যায়। ক্ষেত্রবিশেষ বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীও হয়ে থাকে। যত কম বয়সে চিকিৎসা করা যায় এসব শিশুর স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠার সম্ভাবনা ততই বেশি।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব বড় মেডিকেল কলেজে এসব শিশুর চিকিৎসা করা হয় বলে জানান এই চিকিৎসক।