শিরোনাম

ফুটবল ও বাংলাদেশ

মাসুম বেলাল:
ফুটবলে বাংলাদেশ বিশ্বে একশ কততম পরাশক্তি তা আমার জানা নেই৷ তবে এটা জানি বিশ্বে সবচেয়ে বেশি লোক ফুটবল খেলে ব্রাজিলে আর সবচেয়ে বেশি দেখে বাংলাদেশে৷
এমনকি বিশ্বকাপ মৌসুমে এসেও অন্যান্য দেশ যখন ফুটবল খেলা নিয়ে ব্যাস্ত তখন বাংলাদেশ ব্যাস্ত খেলা দেখা নিয়ে৷ খেলা দেখা নিয়ে লেখালেখি,ঝগড়াঝাঁটি,মারামারি এমনকি পুলিশ মোতায়েনের ঘটনা এদেশে পান্তাভাত৷জমি বিক্রি করে,ভিটেমাটি বিক্রি করে, কিডনী,ফুসফুস বিক্রি করে অন্যদেশের পতাকা নির্মাণ করে বিশ্ব বেকুব সংঘে নিজের নাম লেখানোর জন্য সবচেয়ে বেশি প্রতিযোগীতা যে দেশটিতে হয় সেদেশের নাম আপনারা সবাই জানেন,তাই আমি আর বাংলাদেশের নাম বলে দিতে চাই না৷
আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাও নিজেদের বয়স ও শিক্ষাগত কারনে আন্ত:ভার্সিটি ফুটবল প্রতিযোগীতা আয়োজন এর পরিবর্তে বান্ধবীদেরকে নিয়ে আয়োজন করে ফুটবল খেলা দেখাকেই বেশি পছন্দ করে৷ খেলার মাঠের পরিবর্তে তাদের্কে পর্দার ব্যাবস্থা করে দিলেই এরা বেশি খুশি৷
কিছু দূর্মুখো আমাদের ফুটবল ত্রাস সালাউদ্দীনকে নিয়ে বাজে কথা বললেও তিনি কিন্তু বিশ্বকাপ কোনদেশ পাওয়া উচিৎ  তা নিয়ে পত্রিকায় কলাম লিখে থাকেন যেন ফিফা উপকৃত হতে পারে৷ পারেননা শুধু মোহামেডান,আবাহনী,শেখ রাসেল,কলাবাগান এর মত ঐতিহ্যবাহী ফুটবল ক্লাবগুলোকে আর্কাইভ হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করতে৷ একজন ফুটবলত্রাস সবকিছু করতে হবে এমনতো কোন কথা নেই৷ পারলে এক্টা বিকল্প দেখান৷
২০১৪ সালে লেক ভিক্টোরিয়ার তীরে অবকাশ যাপন করছিলাম৷তখন বিশ্বকাপ চলতেছিল৷ রাজধানী কাম্পালায় অনেক জায়গায়ই দেখেছিলাম উগান্ডানরা ফুটবল খেলে৷ বাংলাদেশের সাথে উগান্ডারও এ বিষয়ে অনেক অমিল, উগান্ডানরা খেলে আর আমাদের ছেলেরা দেখে৷
সন্দেহ নেই, আর্জেন্টিনার ম্যারাডোনা সারা বিশ্বের মত বাংলাদেশেও ফুটবলকে অসম্ভব জনপ্রিয় করে দিয়ে গিয়েছিলেন৷ এদেশে এমনকি নারীরাও ফুটবলকে অসম্ভব পছন্দ করে৷ এত কম সময়ে শরীর গঠন, স্বাস্থ, চরিত্র ও মেধা বদ্ধির এ অসম্ভব জনপ্রিয় খেলাকে আমাদের দেশে স্কুল, কলেজ, ভার্সিটির ত্রিসীমানা থেকে বের করে দেয়া হয়েছে৷
খেলার মাঠ ছাড়াও যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠাণ গড়ে তোলা যায় এমন আজব চিন্তা মানুষ কেবা করে করে? এত বুদ্ধিজীবি দিয়ে এ জাতি কি করিবে?
জাতির স্বাস্থগঠনে এক্ষনে খুব জরুরী হল প্রত্যেক গ্রামে গ্রামে,পাড়ায় মহল্লায়, উপজেলা ও জেলা লেভেলে জাতীয় খেলা দেখা কমিটির মাধ্যমে বিশ্বকাপ ফুটবল সহ ক্লাব পর্যায়ের খেলাগুলো সরাসরি দেখার ব্যাবস্থা করা৷ সময় নিয়ে কোন চিন্তা নেই, প্রয়োজনে তাহাজ্জুদের সময় পর্যন্ত খেলা দেখে আমরা পরেরদিন সন্ধা পর্যন্ত ঘুমাব৷
যে জাতি ফুটবল খেলে না, সে জাতি ফুটবল দেখবেনা তা কি হয় নাকি?তাছাড়া ফুটবল মাঠে খেলতে হবে এমন কোন কথা নেই, হাতে মোবাইল থাকলে খাটেও খেলা যায়৷
লেখক: ক্রীড়ানুরাগী ও সমাজচিন্তক।

Share now

আরও পড়ুন