নোবিপ্রবি প্রতিনিধি:
চারিদিকে শীতের আমেজ। নবীন অতিথির মতন দরজায় কড়া নেড়েছে হেমন্ত। রাতের বেলা হিম হিম শীতের আমেজ যেন সেই ইঙ্গিত দিয়ে দিচ্ছে। শরতের পরিষ্কার নীল আকাশ, সাদা কাশফুলের মেলাকে বিদায় দিয়ে প্রকৃতিতে হেমন্ত নিয়ে আসলো অন্যরকম আবহ। রাতের বেলা টিপটিপ করে ঝরছে কুয়াশার ফোঁটা। সবুজ ঘাস আর পিচঢালা রাস্তা চকচক করছে কুয়াশার চাদরে। বাতাসে নতুন ধানের গন্ধ। এবারের হেমন্তের শুরুর দিনগুলোয় বাড়তি আমেজে কিছু রঙিন চিত্রপট অঙ্কন করলো নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) কৃষি বিভাগে অধ্যয়নরত সকল শিক্ষার্থীরা।দিনটি ছিল রোববার (১৩ নভেম্বর)। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় উপসনালয়ের ঠিক পাশের খোলা জায়গায় ভিন্নধর্মী এক আয়োজন। আর এই আয়োজনের নাম ‘কৃ-মৈত্রী’। দিনব্যাপী উৎসবমুখর পরিবেশে কৃষি বিভাগের শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত আয়োজনের মধ্য দিয়ে মিলিত হন বিভাগটির ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা কর্মচারীরা।ছিলো দিনব্যাপী নানা আয়োজন। ছেলেরা পরে আসেন পাঞ্জাবি আর মেয়েরা পরেন শাড়ী। আর এই নিয়ে চলে শাড়ী-পাঞ্জাবী র্যাম্প শো। চড়ুইভাতি, র্যাফেল ড্র, ফটো সেশন, ফানুস উড়ানো, কুইজ প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। গান- আড্ডায় মুখরিত ছিল কেন্দ্রীয় উপসানালয় এলাকা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিভাগের শিক্ষক ড. গাজী মোহাম্মদ মহসিন, ড. মেহেদী হাসান রুবেল, ড. কাওসার হোসেন, ড. পীযুষ কান্তি, রায়হান আহমেদ রিমন ও সাবিহা খান।
বিভাগটির নবম ব্যাচের শিক্ষার্থী হিমেল দাস বলেন, আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর এভাবে কখনো মিলিত হওয়ার সুযোগ হয়নি। এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিভাগের সবার সঙ্গে মিলিত হলাম। খুবই ভালো লেগেছে।
সপ্তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার জামান সৈকত বলেন, ‘কৃ-মৈত্রীর’ মধ্য দিয়ে আমরা কৃষি পরিবারের সবাই একসাথে হয়েছি। এ আয়োজনের কারণে আমাদের সম্পর্ক দৃঢ় হয়েছে বলে আমরা মনে করি।’
ষষ্ঠ ব্যাচের শিক্ষার্থী সাদিয়া রহমান বলেন, জীবন এখানেই বেশ রঙিন। চমৎকার একটি দিন কাটিয়েছি। সবাইকে একসঙ্গে পেয়ে খুব ভালো লেগেছে। বিভাগের শিক্ষার্থীদের মেলবন্ধনের জন্য এমন আয়োজন প্রতিবারই হওয়া উচিত।
ষষ্ঠ ব্যাচের আরেক শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলাম রনি বলেন, ‘কৃ-মৈত্রী’ কৃষি বিভাগের সকল শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা। যেখানে সিনিয়র জুনিয়র শিক্ষকরা সবাই মিলে আনন্দ আড্ডায় সামিল হয়। শিক্ষা জীবনে অনেক সময় আমরা হতাশায় নিমজ্জিত হয়ে থাকি এসব প্রোগ্রামের মাধ্যমে আমরা হতাশা কাটিয়ে উঠে নতুন উদ্যমে চলার অনুপ্রেরণা পাই। ছাত্রজীবন শেষে কর্মব্যস্ত কোন এক হেমন্তের দিনে স্মৃতির পাতায় নিশ্চয়ই কড়া নাড়বে ‘কৃ-মৈত্রী’। প্রতিবছর এই মিলনমেলা অব্যাহত থাকুক।
সপ্তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও প্রোগ্রামের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান লিমন বলেন, ‘কৃষি বিভাগের শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি মিলনমেলার আয়োজন করার ইচ্ছে থেকেই ‘ কৃ-মৈত্রী’ প্রোগ্রামটি করা। এরকম একটি প্রোগ্রাম হবে শুনে বন্ধুবান্ধব, সিনিয়র জুনিয়রসহ শিক্ষক শিক্ষিকা আমাদের উৎসাহ দেন। সবার সম্মিলিত সহযোগিতা থাকার কারণেই প্রোগ্রামটি সুন্দরভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে।
বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. গাজী মোহাম্মদ মহসিন বলেন, শিক্ষার্থীরা উদ্যোগ নিয়ে এই আয়োজন করেছে। সবমিলিয়ে অসাধারণ একটি আয়োজন। এ ধরণের আয়োজন বিভাগের সব ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বন্ধন সুদৃঢ় করেছে বলে আমি মনে করি।