নোয়াখালী (কবিরহাট) প্রতিনিধি:
নোয়াখালীর কবিরহাটের জগদানন্দ গ্রামে বিজয় মেলার নামে অশ্লীল নৃত্যের আসর ও মাদক ব্যবসা চালানোর অভিযোগ উঠেছে। প্রদর্শনীতে দর্শক সারিতে ভিড় বাড়ছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের।
স্থানীয়দের অভিযোগ, স্থানীয় প্রশাসনের যোগসাজশে ও প্রভাবশালী একটি দলের দুজন নেতার মদদে রমরমা নগ্ননৃত্য ও মাদককারবারি চলছে ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রভাবশালী একটি দলের নেতারা বিজয় মেলার নামে অশ্লীল নৃত্যের আয়োজন করেন। এ মেলার উদ্বোধন করেন উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন কোম্পানি। মেলায় রয়েছে নামমাত্র ১৫-২০টি স্টল। মেলার মূল আকর্ষণ হলো নগ্ননৃত্যের আসর। গভীর রাতে অশ্লীল এ নৃত্য দেখার জন্য উঠতি বয়সী স্কুল, কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী আর গ্রাম্য যুবকদের উপচেপড়া ভিড়। নগ্ননৃত্য চলাকালে মুঠোফোনে ভিডিও এবং ছবি ধারণ একেবারেই নিষিদ্ধ। মুঠোফোনে ভিডিও এবং ছবি ধারণ করলে মেলা কমিটির লোকজন ছিনিয়ে নেয় মুঠোফোন। এসব বিষয়ে ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন কোম্পানির কাছে স্থানীয় একালাবাসী একাধিকবার অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি।
১৬ ডিসেম্বর থেকে পাঁচ জানুয়ারি পর্যন্ত মুকবুল চৌধুরী হাট বিজয় মেলার অনুমোদন নেয় মেলা আয়োজক কমিটি। মেলায় তারা যাত্রাপালার অনুমোদন নিলেও রাতের আঁধারে চলছে উলঙ্গনৃত্য আর ভ্রাম্যমাণ বেচাকেনা। একইসাথে চলছে চোলাই মদ, ইয়াবা ও গাঁজা। স্থানীয় বাসিন্দা শরিয়ত উল্যাহ সাইমুন জানান, মেলায় প্রথম দিন থেকেই চলছে অশ্লীল নাচ-গান। তাতে উঠতি বয়সের কিশোর ও যুবকেরা নষ্ট হতে বাধ্য। অনেক এসএসসি পরীক্ষার্থী নিয়মিত যাত্রা দেখতে যায়। এ জন্য তারা পড়ালেখায় পিছিয়ে পড়ছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও মেলা আয়োজন কমিটির সহ-সভাপতি আবদুল মান্নান মুনাফ ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন বাবুল বলেন, গতকাল আমরা মেলায় ছিলাম না। যদি আপত্তিকর কিছু হয়ে থাকে তা বন্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন কোম্পানি বলেন, আমি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান একেবারে জানি না বললে ভুল হবে। আমি মন থেকে মেলা পরিচালনার সাথে জড়িত নই। দায়িত্বে থাকার কারণে অনেক কিছুতে আমাকেও দোষারোপ করা হয়। তবে এখন পর্যন্ত জুয়ার কোনো আসর বসেনি। জুয়ার আসর বসলে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে। নগ্ননৃত্য চলার বিষয়ে তার কাছে অভিযোগ করার সত্যতাও নিশ্চিত করেন তিনি।
কবিরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাতিমা সুলতানা বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।